Menu |||

মানুষকে সদাসর্বদাই আপন করে দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করা প্রয়োজন 

নজরুল ইসলাম তোফা:: মানুষের জীবন সার্থকতা পায় মনুষ্যত্ব অর্জন করে। শিক্ষা বা সাধনার মাধ্যমে বিবেক, বুদ্ধি কিংবা মনন শক্তি জাগ্রত করে মানুষ প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠে। এ পৃথিবীতে তরুলতা, বৃক্ষ, পশুপাখির মতো মানুষও প্রকৃতির সৃষ্টি। সুতরাং,- প্রকৃতির অন্যান্য সৃষ্টির চেয়ে বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে মানুষ একেবারেই আলাদা। একটু ইতিহাসের আলোকেই বলা দরকার হয় যে মানুষ সমাজ গঠন করে অনেক আগে থেকেই, তাদের সভ্যতা কিংবা জাতি গঠনের নানা কাজ শুরু হয়ে ছিল: প্রাচীন, প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই। বন-জঙ্গল কিংবা পাহাড়ের পাদদেশে বা নদী তীর সহ বিভিন্ন গুহায় সেসব মানুষের অবস্থান ছিল। জীবন জীবিকার কারণে, হিংস্র পশুদের সঙ্গেই ছিল মানুষের বসবাস। আত্ম রক্ষার কারণে যেন তাদের হিংস্র পশুদের সঙ্গে যুদ্ধ করে জীবনকে কাটাতে হয়েছিল। সেই সময়েই অস্ত্র ছিল লাঠি ও বড় বড় পাথর আর তাদের ছিল- অনেক “মানবিক বুদ্ধি কিংবা দৈহিক শক্তি” যা আজকের বর্তমান সময়ে তুলনায় এক হিসাবে শক্তিধর বলা যেতেই পারে। তারা নানা স্থানেস্থানেই যেন দলবদ্ধভাবে অনেক ভালবাসার সহিত একত্রেই বসবাস শুরু করেছিল। এই সমাজ বন্ধতার মুল কারণটাই হিংস্র প্রাণী গুলোর “ভয়ানক ছোবলে” যেন কখনোই না পড়ে। তাদের এ চিন্তা-চেতনার সু-গভীর আলাপ আলোচনাটা শুরু হয়েছিল একে অপরের প্রতি গভীর ভালোবাসা বা দলবদ্ধতার কারণটা থেকেই। হঠাৎ বিপদ আসলে একে অন্যের ডাক হাক দিলে একত্র হয়েই- “হিংস্র পশুদেরকে দমন” করতে পারে। এমন ভাবে সেই মানুষ’রা পাহাড়ের গুহায়, বনে-জঙ্গলে, নদীতীরে বসতবাড়ি গুলি কষ্টসাধ্য হলেও গড়ে তুলেছিল। তাদের সেই ‘ছোট ছোট আস্তানা’ মানে বসবাসের নিজস্ব স্থান অনেক নান্দনিক না হলেও আজকের যুগের এই ঘর বাড়ির চেয়ে ‘সুস্থসম্মত’ ছিল। আলো, বাতাস বা প্রকৃতির সঙ্গে তাঁরা মিলে মিশেই যেন শক্তিশালী জীবন নিয়ে বসবাস করেছিল। এ জন্যে সেই সামাজিক মানুষদের স্মরণ করেই আজকের যুগের এই মানুষ গুলোকে সেই অতীত সমাজজীবনের শিক্ষা নিয়ে “কে আপন বা পর” বিভেদ সৃষ্টি না করে, দলগত ভাবেই ভালোবাসার সহিত বসবাস করতে হবে।
আসলে এ আলোচনায়, অতীত মানুষের ইতিহাস টানার মুল কারণই হলো বর্তমান সমাজ জীবনের এই মানুষের বহু অসংগতি পরিলিক্ষত হয়। নিজস্ব সংসার আর বিশ্ব সংসারের মানুষ গুলোকে এতোটিই ‘পরভাবা’ শুরু করা হয়েছে যে, অন্যের জন্য ফিরেও তাকাই না বা অন্যদের প্রতি নিষ্ঠুরতা দেখানো হয়। মানুষ মরণশীল, এই পৃথিবী ছেড়ে আমাদের চলে যেতে হবে। জন্ম যেমন আছে মৃত্যু আছে, এ কথাটি আমরা ভুলে যাই। বাংলাদেশসহ সমগ্র  বিশ্বে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে অনেক গুণীজন বা বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদরা মারা যাচ্ছেন। তাঁদেরকে নিয়ে আমরা মজা করছি বা গীবত করছি। নিজের ছাড়া যেন  তাঁদেরকে আপন ভাবতেই পারছিনা। দুঃখজনক হলেও সত্য যে কিংবদন্তি অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান বা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনদের মতো বহু মানুষকে আমরা ‘মজার ছলে হোক বা নির্বুদ্ধিতাতেই হোক’, জান্ত থাকা অবস্থায় মেরে ফেলছি। ইনাদের আপন না ভেবেই পর ভেবে ভেদাভেদ সৃষ্টি করে যেন এমন গুজব ছড়িয়ে অহেতুক মজা নিচ্ছি। তাতে পরোক্ষভাবে সব মানুষদের ক্ষতি হচ্ছে। একটু অতীতের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এবাংলাদেশে অনেক গুজব ছড়িয়ে মানুষকে পিটিয়েও মেরেছে। এই গুলো হয় শুধুমাত্র- ‘আপন পর’ ভেদাভেদ সৃষ্টি করে। নিজের দুঃখ বেদনা আসতেই পারে তা ভুলে গেছি, অপরের দুঃখ-কষ্টকে তামাশার পাত্র বানিয়ে যেন চরম বিনোদনে অতিশয়ক্রুদ্ধ হয়ে উঠছি। অন্য মানুষের দুঃখে দুঃখিত হয়ে, অন্যের ব্যথায় সমব্যথী হয়েই মানব- জীবনে স্মরণীয়, বরণীয় হয়ে থাকা যায় তা দিনে দিনেই ভুলে যাচ্ছি। দুইএকটা উদাহরণ না দিলেই নয়, তাহলো: অন্যের জমির ফসল কাটার জন্য কৃষকরা মানুষ পাচ্ছে না কিংবা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতেও মানুষ মানুষদের সচেতন করছে না। “খাদ্য সংকট” একদিকেই যেমন বাড়ছে, অপর দিকে আবার করোনা ভাইরাস সহ নানা রোগের মহামারীও দেখা দিচ্ছে। অপরকে “সাহায্য না করে” বৃথাই নিজে বাঁচতে চাচ্ছি। মানুষের সামাজিক মমত্ববোধে উঠেই গেছে। এই সমাজ মানুষকে অভিশাপ দিতেই পারে। সুতরাং- মানুষদেরকে সামাজিক অবক্ষয় গুলোকে চিহ্নিত করে একে অপরের প্রতি ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিত।
অপরের দুঃখ-কষ্ট নিজের জীবনের অংশ মনে করতেই হবে, অসুস্থদের সুচিকিৎসা এবং সেবা করতে হবে, দিন আনে দিন খায় সেসব অসহায় হতদরিদ্র মানুষদের যদি আমরা খাবার দিতে না পারি ইতিহাস আমাদের কখনো ক্ষমা করবে না। সমাজ জীবনে অনেক অপূর্ণতা নিয়েই আমাদের নানা ‘অভিযোগ-ক্ষোভ’ থাকতেই পারে। কিন্তু এক ‘দল বা গোষ্ঠী’ অন্য ‘দল বা গোষ্ঠীর’ কোনো প্রকার বিভেদ সৃষ্টি না করে। একে অপরের যত টুকুই দুঃখ-কষ্ট থাকুক না কেন! তাকে হৃদয়ঙ্গম করে নিজের অভাব বা দুঃখ-কষ্ট এবং ক্ষোভ ভুলে থাকতে পারলেই এই প্রকৃতি প্রকৃত মানুষ গুলোকে আপন করে নিয়ে আবার হয়তো একটি সুন্দর সমাজ দান করবেন। এমানুষের বেহিসাবি হিসাব দুর করে “কে আপন কে পর”,- এমন বিভেদ সৃষ্টি না করে সব মানুষকে আপন করে নেওয়ার মানসিকতা সৃষ্টি করতে হবে।
মানুষের জীবন সংক্ষিপ্ত, ‘আকাঙ্খা’- কিন্তু অনেক। তার এই অনন্ত আশা-আকাঙ্খা, কোনো দিনই পরিতৃপ্ত হবার নয়। এমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও অভাবের শেষ নেই, তেমনি তার ছুটে চলারও শেষ নেই। এপৃথিবীতে প্রতিটি পদে চাওয়া-পাওয়ার লুকোচুরি খেলা চলছে। অর্থ চায়, বিত্ত চায়, প্রতিপত্তি চায়, তাছাড়া চায় যশ-সম্মান-খ্যাতি এইমানুষ। সুতরাং এগুলো যখন মানুষ পেয়ে যায় তখন তার পরি তৃপ্তি হয় না। মানুষকে কখনোই- মানুষ মনে না করে শুরু করে দেয় ‘বিভিন্ন ধরনের ক্রাইম’। যা চায়, তা পাওয়া হলেও আরও ‘আকাঙ্ক্ষা’ এসে ভর করে তাদের জীবনে। তাদের ‘আপন পর’ ভেদাভেদ সৃষ্টি করে একটি পশুর জীবন হয়ে যায়। ফলে অনাদি অন্তহীন আকর্ষণে একদিগন্ত থেকে অন্যদিগন্তে ধাবিত হয় এ মানুষ। এতে নৈরাশ্যের এক অন্ধকারে সে নিক্ষিপ্ত হয়। এই দুঃখবোধ তাঁকে কখনো মুক্তি দেয় না। তাই, আমরা যদি- শুধুমাত্র নিজের দুঃখের কথা না ভেবে অন্যমানুষের দুঃখ-কষ্টের কথাগুলি চিন্তা করি তাহলেই এই দুঃখবোধ থেকে মুক্তি পেতে পারি। নিজের দশতলা ভবন না থাকার জন্য যেন ক্ষোভ জমতেই পারে। কিন্তু দরিদ্র-ক্লিষ্ট মানুষের একটি কুড়ো ঘর নেই, তার তো দুঃখ আরো গভীর। এর পরেও যদি নিজের নেই দশ তলা ভবন, সেই ব্যাপারটাকেই বড় করে দেখি তবে তাহবে একে বারে ব্যক্তিকেন্দ্রিক কিংবা ভিত্তিহীন চিন্তা। ব্যক্তিগত চিন্তা কখনোই মানুষকে ‘সুখী’ হতে দেয় না। সুতরাং অপরের প্রতি সুগভীর ভালোবাসা দেখান তাতে করে পরোক্ষভাবেই আপনার সুখ আসতে পারে।
ইতিহাসের দিকে দৃষ্টি দিলে অবশ্যই ধারনা পাওয়া যাবে পৃথিবীর সৃষ্টির সময় তাদের বসবাস ছিল বহু দুরে দুরে। কিযে কষ্ট ছিল তাদের অনেকদূরের পথ অতিক্রম করে একজন পথচারীর সাথেই আরেক জন পথচারীর হঠাৎ করে দেখা হতো। স্বভাবগত আর স্বাভাবিক ভাবেই যেন একজন পথচারী আরেকজন পথচারীকে খুব আনন্দের সঙ্গেই কুশল জিজ্ঞাসা করতো বা ভাব বিনিময় করতো। তখন ছিল না, কে- আপন, কে বা পর। বর্তমানে আমরা যদি কাউকে চিনি-জানি, পথ চলতে তাদের সাথে দেখা হলেই হয়তোবা আলাপ করি, অন্যথায় করি না। বাজার -হাটে, মিটিং-সভায় কিংবা কোনো অনুষ্ঠানেই, এ কথায় যেখানেই হোক না কেন, পরিচয় বা পরিচিতি থাকলেই- যেন কুশল বিনিময় করি বা কথাবার্তা বলে থাকি। কিন্তু অতীত ইতিহাসে এই মানুষই যেন সামাজিক ও আত্মীক বন্ধন মনে করে একে অপরের প্রতি গভীর ভালোবাসায়   জীবন যাপন করতো।
আপন কিংবা পর শব্দটি সমাজ, জাতি- গোষ্ঠীতে শ্রেণি বিভাজন থেকেই যেন সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করি। তবে আসল কথাটি হচ্ছে নিজের দেশে ও সমাজে জনসংখ্যা ক্রমধাবমান গতিটাই এরজন্য দায়ী। আর হিংসা, নিন্দা, প্রতিহিংসা, শত্রুতা, হানাহানি, হত্যাকান্ড ইত্যাদি বর্তমান সমাজকে গ্রাস করে ফেলেছে। আপন বা পর সম্পর্কের ভেদাভেদ রক্ষিত হচ্ছেনা। শুধুই লোভ, স্বার্থ, অহংকার, স্বার্থপরতা, প্রতিনিয়তই যেন মর্মভেদী ঘটনাবলীর জন্ম দিচ্ছে। যাকে বলি ‘আপন’, সে আপনজনরাই পর হচ্ছে, পরও ঘটনাচক্রে আপনের ভূমিকা পালন করছে। এমন উদাহরণটা এই দেশ কিংবা সমাজে খুব বিরল। বর্তমান সমাজে আমরা সবাই শুধুই নিজস্ব বাঁধনে, আত্মীয়তায় সমাজবদ্ধ ভাবেই আপনজনদের নিয়ে আত্মীয়তা গড়ে তুলছি। এ দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটও আত্মীয়তার মতো এক বন্ধনে আবদ্ধ। তা ছাড়াও তো বিবাহ বন্ধনেই আত্মীয়তার পরিধির বিস্তার লাভ করছে। এভাবেই যেন আপন বা পরকে চিহ্নিত করছি। সুতরাং আন্তরিকভাবে বা সত্যিকার অর্থেই সবাই আমরা আপন। কেউ পর নই ইতিহাস তো তাই বলে। করোনার এই সংকট কালে “পর ও আপন” ভেদাভেদ সৃষ্টি না করে। সকল মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল ও ভালোবাসার সম্প্রসারণে- “বাংলাদেশ সহ সারাবিশ্ব” থেকে একরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দূর করা সম্ভব।
কবি বলেছেনও “আপনাকে নিয়ে বিব্রত থাকিতে আসে নাই কেহ অবনী পরে/…… সকলের তরে সকলি আমরা প্রত্যেকে মোরা পরের তরে।” এ মানুষরা তার জীবনকে তিনটি পর্যায়ে জড়িয়ে রাখতে বাধ্য। অন্যথায় জীবনের স্বাদ যেন স্বার্থকতার প্রতিফলন ঘটে। পর্যায়গুলো হচ্ছে সাংসারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় পর্যায়। প্রতিটি পর্যায়েই রয়েছে আত্মীক ও মানসিক প্রবৃত্তির ঘনিষ্ঠতা। সামান্য বিশ্লেষণে যদি যাই, তা হলে সাংসারিক পর্যায়েই রয়েছে “আত্মীক বা মানসিক” প্রবৃত্তির ঘনিষ্ঠ বন্ধন। সামাজিক পর্যায়ে আছে আত্মীক বা আনুষ্ঠানিকতার বন্ধন। যাকে কোনো ক্ষেত্রেই মানসিক বিচ্ছিন্নতাকে অনুমোদন দেয়া যায় না। আত্মীক রুচিসম্মত ভাব বন্ধনটি যদি না থাকে, তবে মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়েই দেখা যাবে বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খলা। তা ছাড়াও ধর্মীয় পর্যায়ে মানুষের বন্ধনের গুরুত্বটা কম নয়। সারা পৃথিবীতে মানুষের বেঁচে থাকার প্রয়োজনে অনেকগুলো মৌলিক চাহিদা পূরণ করে এই ধর্মীয় বন্ধন। বিশ্বাস নিয়ে মানুষের জীবন। ধর্মাবলম্বীরা শাখা-প্রশাখায় ভিন্ন ভিন্ন দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্রসারিত হলেও নিজস্ব ধর্মের বন্ধনে আবদ্ধ। কিন্তু এতসব কথার  পরও, একথা চরম সত্য যে, “মানুষ মানুষের বন্ধু”। কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের কবিতা মতেই বলতে হয়,- ‘বিশ্বজুড়ে এক জাতি আছে,..সে জাতির নাম মানুষ জাতি/..একই পৃথিবীর স্তন্যে লালিত একই রবি শশী মোদের সাথী।’ এ কবি জাতি বলতে এই মানব জাতিটাকে বুঝিয়েছেন। এ মানব জাতির প্রতি মহান সৃষ্টি কর্তার অগাধ ভালোবাসা সহিত মানুষের প্রতি মানুষের বন্ধনের কথা বুঝায়েছেন। মানবজাতি সৃষ্টির সেরা জীব হয়ে আকৃতি, প্রকৃতি এবং স্বভাবে এক হয়ে, একে অন্যের প্রতি ভিন্ন ভিন্ন আচরণে প্রবৃত্ত কেন হবে? তাই বলা হয়েছে মানবজাতি ভিন্ন ভিন্ন জাতিগোষ্ঠতে বিভক্ত থাকলেও মানুষরা মানুষ হিসেবেই গণ্য-এর কোনো ভিন্নতা থাকতে পারেনা। আপন কিংবা পর থাকবেনা। মানুষের মনে মানবতা বোধ সদা জাগ্রত হওয়া প্রয়োজন। যে কোনো সময়েই আমাদের মানবতা বোধের পরিচয় দিতে হবে। “কে আপন, কে পর।” এমন ভাবনাটা দূর করে মানবতা বোধে মানবজাতিকে হৃদয়ে আপন করে নেয়া উচিত। সুতরাং সদাসর্বদাই যেকোনো মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা জাগ্রত ও ক্রিয়াশীল হওয়া প্রয়োজন।
লেখকঃ 
নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক।
Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» তারেক মনোয়ার একজন স্পষ্ট মিথ্যাবাদী

» কুয়েতে নতুন আইনে অবৈধ প্রবাসীদের কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে

» সোশ্যাল প্লাটফর্মে লন্ডনী মেয়েদের বেলেল্লাপনা,চাম্পাবাত সবার শীর্ষে

» ফারুকীর পদত্যাগের বিষয়টি সঠিক নয়

» পাকিস্তান থেকে সেই আলোচিত জাহাজে যা যা এল

» মিছিল করায় আট মাস ধরে সৌদি কারাগারে ৯৩ প্রবাসী, দুশ্চিন্তায় পরিবার

» কুয়েতে যুবলীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

» ক্ষমা না চাইলে নুরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়

» বাকু থেকে ফিরলেন ড. মুহাম্মাদ ইউনূস

» শুক্রবার আহত ও শহীদদের স্মরণে কর্মসূচি দিলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
,

মানুষকে সদাসর্বদাই আপন করে দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করা প্রয়োজন 

নজরুল ইসলাম তোফা:: মানুষের জীবন সার্থকতা পায় মনুষ্যত্ব অর্জন করে। শিক্ষা বা সাধনার মাধ্যমে বিবেক, বুদ্ধি কিংবা মনন শক্তি জাগ্রত করে মানুষ প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠে। এ পৃথিবীতে তরুলতা, বৃক্ষ, পশুপাখির মতো মানুষও প্রকৃতির সৃষ্টি। সুতরাং,- প্রকৃতির অন্যান্য সৃষ্টির চেয়ে বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে মানুষ একেবারেই আলাদা। একটু ইতিহাসের আলোকেই বলা দরকার হয় যে মানুষ সমাজ গঠন করে অনেক আগে থেকেই, তাদের সভ্যতা কিংবা জাতি গঠনের নানা কাজ শুরু হয়ে ছিল: প্রাচীন, প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই। বন-জঙ্গল কিংবা পাহাড়ের পাদদেশে বা নদী তীর সহ বিভিন্ন গুহায় সেসব মানুষের অবস্থান ছিল। জীবন জীবিকার কারণে, হিংস্র পশুদের সঙ্গেই ছিল মানুষের বসবাস। আত্ম রক্ষার কারণে যেন তাদের হিংস্র পশুদের সঙ্গে যুদ্ধ করে জীবনকে কাটাতে হয়েছিল। সেই সময়েই অস্ত্র ছিল লাঠি ও বড় বড় পাথর আর তাদের ছিল- অনেক “মানবিক বুদ্ধি কিংবা দৈহিক শক্তি” যা আজকের বর্তমান সময়ে তুলনায় এক হিসাবে শক্তিধর বলা যেতেই পারে। তারা নানা স্থানেস্থানেই যেন দলবদ্ধভাবে অনেক ভালবাসার সহিত একত্রেই বসবাস শুরু করেছিল। এই সমাজ বন্ধতার মুল কারণটাই হিংস্র প্রাণী গুলোর “ভয়ানক ছোবলে” যেন কখনোই না পড়ে। তাদের এ চিন্তা-চেতনার সু-গভীর আলাপ আলোচনাটা শুরু হয়েছিল একে অপরের প্রতি গভীর ভালোবাসা বা দলবদ্ধতার কারণটা থেকেই। হঠাৎ বিপদ আসলে একে অন্যের ডাক হাক দিলে একত্র হয়েই- “হিংস্র পশুদেরকে দমন” করতে পারে। এমন ভাবে সেই মানুষ’রা পাহাড়ের গুহায়, বনে-জঙ্গলে, নদীতীরে বসতবাড়ি গুলি কষ্টসাধ্য হলেও গড়ে তুলেছিল। তাদের সেই ‘ছোট ছোট আস্তানা’ মানে বসবাসের নিজস্ব স্থান অনেক নান্দনিক না হলেও আজকের যুগের এই ঘর বাড়ির চেয়ে ‘সুস্থসম্মত’ ছিল। আলো, বাতাস বা প্রকৃতির সঙ্গে তাঁরা মিলে মিশেই যেন শক্তিশালী জীবন নিয়ে বসবাস করেছিল। এ জন্যে সেই সামাজিক মানুষদের স্মরণ করেই আজকের যুগের এই মানুষ গুলোকে সেই অতীত সমাজজীবনের শিক্ষা নিয়ে “কে আপন বা পর” বিভেদ সৃষ্টি না করে, দলগত ভাবেই ভালোবাসার সহিত বসবাস করতে হবে।
আসলে এ আলোচনায়, অতীত মানুষের ইতিহাস টানার মুল কারণই হলো বর্তমান সমাজ জীবনের এই মানুষের বহু অসংগতি পরিলিক্ষত হয়। নিজস্ব সংসার আর বিশ্ব সংসারের মানুষ গুলোকে এতোটিই ‘পরভাবা’ শুরু করা হয়েছে যে, অন্যের জন্য ফিরেও তাকাই না বা অন্যদের প্রতি নিষ্ঠুরতা দেখানো হয়। মানুষ মরণশীল, এই পৃথিবী ছেড়ে আমাদের চলে যেতে হবে। জন্ম যেমন আছে মৃত্যু আছে, এ কথাটি আমরা ভুলে যাই। বাংলাদেশসহ সমগ্র  বিশ্বে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে অনেক গুণীজন বা বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদরা মারা যাচ্ছেন। তাঁদেরকে নিয়ে আমরা মজা করছি বা গীবত করছি। নিজের ছাড়া যেন  তাঁদেরকে আপন ভাবতেই পারছিনা। দুঃখজনক হলেও সত্য যে কিংবদন্তি অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান বা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনদের মতো বহু মানুষকে আমরা ‘মজার ছলে হোক বা নির্বুদ্ধিতাতেই হোক’, জান্ত থাকা অবস্থায় মেরে ফেলছি। ইনাদের আপন না ভেবেই পর ভেবে ভেদাভেদ সৃষ্টি করে যেন এমন গুজব ছড়িয়ে অহেতুক মজা নিচ্ছি। তাতে পরোক্ষভাবে সব মানুষদের ক্ষতি হচ্ছে। একটু অতীতের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এবাংলাদেশে অনেক গুজব ছড়িয়ে মানুষকে পিটিয়েও মেরেছে। এই গুলো হয় শুধুমাত্র- ‘আপন পর’ ভেদাভেদ সৃষ্টি করে। নিজের দুঃখ বেদনা আসতেই পারে তা ভুলে গেছি, অপরের দুঃখ-কষ্টকে তামাশার পাত্র বানিয়ে যেন চরম বিনোদনে অতিশয়ক্রুদ্ধ হয়ে উঠছি। অন্য মানুষের দুঃখে দুঃখিত হয়ে, অন্যের ব্যথায় সমব্যথী হয়েই মানব- জীবনে স্মরণীয়, বরণীয় হয়ে থাকা যায় তা দিনে দিনেই ভুলে যাচ্ছি। দুইএকটা উদাহরণ না দিলেই নয়, তাহলো: অন্যের জমির ফসল কাটার জন্য কৃষকরা মানুষ পাচ্ছে না কিংবা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতেও মানুষ মানুষদের সচেতন করছে না। “খাদ্য সংকট” একদিকেই যেমন বাড়ছে, অপর দিকে আবার করোনা ভাইরাস সহ নানা রোগের মহামারীও দেখা দিচ্ছে। অপরকে “সাহায্য না করে” বৃথাই নিজে বাঁচতে চাচ্ছি। মানুষের সামাজিক মমত্ববোধে উঠেই গেছে। এই সমাজ মানুষকে অভিশাপ দিতেই পারে। সুতরাং- মানুষদেরকে সামাজিক অবক্ষয় গুলোকে চিহ্নিত করে একে অপরের প্রতি ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিত।
অপরের দুঃখ-কষ্ট নিজের জীবনের অংশ মনে করতেই হবে, অসুস্থদের সুচিকিৎসা এবং সেবা করতে হবে, দিন আনে দিন খায় সেসব অসহায় হতদরিদ্র মানুষদের যদি আমরা খাবার দিতে না পারি ইতিহাস আমাদের কখনো ক্ষমা করবে না। সমাজ জীবনে অনেক অপূর্ণতা নিয়েই আমাদের নানা ‘অভিযোগ-ক্ষোভ’ থাকতেই পারে। কিন্তু এক ‘দল বা গোষ্ঠী’ অন্য ‘দল বা গোষ্ঠীর’ কোনো প্রকার বিভেদ সৃষ্টি না করে। একে অপরের যত টুকুই দুঃখ-কষ্ট থাকুক না কেন! তাকে হৃদয়ঙ্গম করে নিজের অভাব বা দুঃখ-কষ্ট এবং ক্ষোভ ভুলে থাকতে পারলেই এই প্রকৃতি প্রকৃত মানুষ গুলোকে আপন করে নিয়ে আবার হয়তো একটি সুন্দর সমাজ দান করবেন। এমানুষের বেহিসাবি হিসাব দুর করে “কে আপন কে পর”,- এমন বিভেদ সৃষ্টি না করে সব মানুষকে আপন করে নেওয়ার মানসিকতা সৃষ্টি করতে হবে।
মানুষের জীবন সংক্ষিপ্ত, ‘আকাঙ্খা’- কিন্তু অনেক। তার এই অনন্ত আশা-আকাঙ্খা, কোনো দিনই পরিতৃপ্ত হবার নয়। এমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও অভাবের শেষ নেই, তেমনি তার ছুটে চলারও শেষ নেই। এপৃথিবীতে প্রতিটি পদে চাওয়া-পাওয়ার লুকোচুরি খেলা চলছে। অর্থ চায়, বিত্ত চায়, প্রতিপত্তি চায়, তাছাড়া চায় যশ-সম্মান-খ্যাতি এইমানুষ। সুতরাং এগুলো যখন মানুষ পেয়ে যায় তখন তার পরি তৃপ্তি হয় না। মানুষকে কখনোই- মানুষ মনে না করে শুরু করে দেয় ‘বিভিন্ন ধরনের ক্রাইম’। যা চায়, তা পাওয়া হলেও আরও ‘আকাঙ্ক্ষা’ এসে ভর করে তাদের জীবনে। তাদের ‘আপন পর’ ভেদাভেদ সৃষ্টি করে একটি পশুর জীবন হয়ে যায়। ফলে অনাদি অন্তহীন আকর্ষণে একদিগন্ত থেকে অন্যদিগন্তে ধাবিত হয় এ মানুষ। এতে নৈরাশ্যের এক অন্ধকারে সে নিক্ষিপ্ত হয়। এই দুঃখবোধ তাঁকে কখনো মুক্তি দেয় না। তাই, আমরা যদি- শুধুমাত্র নিজের দুঃখের কথা না ভেবে অন্যমানুষের দুঃখ-কষ্টের কথাগুলি চিন্তা করি তাহলেই এই দুঃখবোধ থেকে মুক্তি পেতে পারি। নিজের দশতলা ভবন না থাকার জন্য যেন ক্ষোভ জমতেই পারে। কিন্তু দরিদ্র-ক্লিষ্ট মানুষের একটি কুড়ো ঘর নেই, তার তো দুঃখ আরো গভীর। এর পরেও যদি নিজের নেই দশ তলা ভবন, সেই ব্যাপারটাকেই বড় করে দেখি তবে তাহবে একে বারে ব্যক্তিকেন্দ্রিক কিংবা ভিত্তিহীন চিন্তা। ব্যক্তিগত চিন্তা কখনোই মানুষকে ‘সুখী’ হতে দেয় না। সুতরাং অপরের প্রতি সুগভীর ভালোবাসা দেখান তাতে করে পরোক্ষভাবেই আপনার সুখ আসতে পারে।
ইতিহাসের দিকে দৃষ্টি দিলে অবশ্যই ধারনা পাওয়া যাবে পৃথিবীর সৃষ্টির সময় তাদের বসবাস ছিল বহু দুরে দুরে। কিযে কষ্ট ছিল তাদের অনেকদূরের পথ অতিক্রম করে একজন পথচারীর সাথেই আরেক জন পথচারীর হঠাৎ করে দেখা হতো। স্বভাবগত আর স্বাভাবিক ভাবেই যেন একজন পথচারী আরেকজন পথচারীকে খুব আনন্দের সঙ্গেই কুশল জিজ্ঞাসা করতো বা ভাব বিনিময় করতো। তখন ছিল না, কে- আপন, কে বা পর। বর্তমানে আমরা যদি কাউকে চিনি-জানি, পথ চলতে তাদের সাথে দেখা হলেই হয়তোবা আলাপ করি, অন্যথায় করি না। বাজার -হাটে, মিটিং-সভায় কিংবা কোনো অনুষ্ঠানেই, এ কথায় যেখানেই হোক না কেন, পরিচয় বা পরিচিতি থাকলেই- যেন কুশল বিনিময় করি বা কথাবার্তা বলে থাকি। কিন্তু অতীত ইতিহাসে এই মানুষই যেন সামাজিক ও আত্মীক বন্ধন মনে করে একে অপরের প্রতি গভীর ভালোবাসায়   জীবন যাপন করতো।
আপন কিংবা পর শব্দটি সমাজ, জাতি- গোষ্ঠীতে শ্রেণি বিভাজন থেকেই যেন সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করি। তবে আসল কথাটি হচ্ছে নিজের দেশে ও সমাজে জনসংখ্যা ক্রমধাবমান গতিটাই এরজন্য দায়ী। আর হিংসা, নিন্দা, প্রতিহিংসা, শত্রুতা, হানাহানি, হত্যাকান্ড ইত্যাদি বর্তমান সমাজকে গ্রাস করে ফেলেছে। আপন বা পর সম্পর্কের ভেদাভেদ রক্ষিত হচ্ছেনা। শুধুই লোভ, স্বার্থ, অহংকার, স্বার্থপরতা, প্রতিনিয়তই যেন মর্মভেদী ঘটনাবলীর জন্ম দিচ্ছে। যাকে বলি ‘আপন’, সে আপনজনরাই পর হচ্ছে, পরও ঘটনাচক্রে আপনের ভূমিকা পালন করছে। এমন উদাহরণটা এই দেশ কিংবা সমাজে খুব বিরল। বর্তমান সমাজে আমরা সবাই শুধুই নিজস্ব বাঁধনে, আত্মীয়তায় সমাজবদ্ধ ভাবেই আপনজনদের নিয়ে আত্মীয়তা গড়ে তুলছি। এ দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটও আত্মীয়তার মতো এক বন্ধনে আবদ্ধ। তা ছাড়াও তো বিবাহ বন্ধনেই আত্মীয়তার পরিধির বিস্তার লাভ করছে। এভাবেই যেন আপন বা পরকে চিহ্নিত করছি। সুতরাং আন্তরিকভাবে বা সত্যিকার অর্থেই সবাই আমরা আপন। কেউ পর নই ইতিহাস তো তাই বলে। করোনার এই সংকট কালে “পর ও আপন” ভেদাভেদ সৃষ্টি না করে। সকল মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল ও ভালোবাসার সম্প্রসারণে- “বাংলাদেশ সহ সারাবিশ্ব” থেকে একরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দূর করা সম্ভব।
কবি বলেছেনও “আপনাকে নিয়ে বিব্রত থাকিতে আসে নাই কেহ অবনী পরে/…… সকলের তরে সকলি আমরা প্রত্যেকে মোরা পরের তরে।” এ মানুষরা তার জীবনকে তিনটি পর্যায়ে জড়িয়ে রাখতে বাধ্য। অন্যথায় জীবনের স্বাদ যেন স্বার্থকতার প্রতিফলন ঘটে। পর্যায়গুলো হচ্ছে সাংসারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় পর্যায়। প্রতিটি পর্যায়েই রয়েছে আত্মীক ও মানসিক প্রবৃত্তির ঘনিষ্ঠতা। সামান্য বিশ্লেষণে যদি যাই, তা হলে সাংসারিক পর্যায়েই রয়েছে “আত্মীক বা মানসিক” প্রবৃত্তির ঘনিষ্ঠ বন্ধন। সামাজিক পর্যায়ে আছে আত্মীক বা আনুষ্ঠানিকতার বন্ধন। যাকে কোনো ক্ষেত্রেই মানসিক বিচ্ছিন্নতাকে অনুমোদন দেয়া যায় না। আত্মীক রুচিসম্মত ভাব বন্ধনটি যদি না থাকে, তবে মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়েই দেখা যাবে বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খলা। তা ছাড়াও ধর্মীয় পর্যায়ে মানুষের বন্ধনের গুরুত্বটা কম নয়। সারা পৃথিবীতে মানুষের বেঁচে থাকার প্রয়োজনে অনেকগুলো মৌলিক চাহিদা পূরণ করে এই ধর্মীয় বন্ধন। বিশ্বাস নিয়ে মানুষের জীবন। ধর্মাবলম্বীরা শাখা-প্রশাখায় ভিন্ন ভিন্ন দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্রসারিত হলেও নিজস্ব ধর্মের বন্ধনে আবদ্ধ। কিন্তু এতসব কথার  পরও, একথা চরম সত্য যে, “মানুষ মানুষের বন্ধু”। কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের কবিতা মতেই বলতে হয়,- ‘বিশ্বজুড়ে এক জাতি আছে,..সে জাতির নাম মানুষ জাতি/..একই পৃথিবীর স্তন্যে লালিত একই রবি শশী মোদের সাথী।’ এ কবি জাতি বলতে এই মানব জাতিটাকে বুঝিয়েছেন। এ মানব জাতির প্রতি মহান সৃষ্টি কর্তার অগাধ ভালোবাসা সহিত মানুষের প্রতি মানুষের বন্ধনের কথা বুঝায়েছেন। মানবজাতি সৃষ্টির সেরা জীব হয়ে আকৃতি, প্রকৃতি এবং স্বভাবে এক হয়ে, একে অন্যের প্রতি ভিন্ন ভিন্ন আচরণে প্রবৃত্ত কেন হবে? তাই বলা হয়েছে মানবজাতি ভিন্ন ভিন্ন জাতিগোষ্ঠতে বিভক্ত থাকলেও মানুষরা মানুষ হিসেবেই গণ্য-এর কোনো ভিন্নতা থাকতে পারেনা। আপন কিংবা পর থাকবেনা। মানুষের মনে মানবতা বোধ সদা জাগ্রত হওয়া প্রয়োজন। যে কোনো সময়েই আমাদের মানবতা বোধের পরিচয় দিতে হবে। “কে আপন, কে পর।” এমন ভাবনাটা দূর করে মানবতা বোধে মানবজাতিকে হৃদয়ে আপন করে নেয়া উচিত। সুতরাং সদাসর্বদাই যেকোনো মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা জাগ্রত ও ক্রিয়াশীল হওয়া প্রয়োজন।
লেখকঃ 
নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক।
Facebook Comments Box


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



Exchange Rate

Exchange Rate EUR: Thu, 21 Nov.

সর্বশেষ খবর



Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Bangladesh Office

Director. Rumi Begum
Adviser. Advocate Koyes Ahmed
Desk Editor (Dhaka) Saiyedul Islam
44, Probal Housing (4th floor), Ring Road, Mohammadpur,
Dhaka-1207. Bangladesh
Contact: +8801733966556 /+8801316861577

Email Address

agrodristi@gmail.com, agrodristitv@gmail.com

Licence No.

MC- 00158/07      MC- 00032/13

Design & Devaloped BY Popular-IT.Com
error: দুঃখিত! অনুলিপি অনুমোদিত নয়।